সিনিয়ররা প্রায় ধরেই নেন অফিসে অধীনস্তদের সব সময়ই দৌড়ের উপর রাখতে হবে। তিরস্কার করলে তারা ভয়ে লজ্জায় ভালো কাজ করবে। এমন যারা ভাবেন তাদের জন্য বলছি ভুল। পুরো ভাবনাটাই ভুল। আসলে ব্যাপারটি ঠিক উল্টো। তিরস্কার নয় প্রশংসায় পারে একজন কর্মীর কাছ থেকে তার সবটুকু মনোযোগ নিতে। শ্রম নিতে। মনে রাখতে হবে ভালো কর্মী ছাড়া কখনো ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়। আর তিরস্কার আসলে কোন মানুষকে উজ্জীবিত করে না। বরং বসদের প্রশংসা কর্মীদের মধ্যে কাজের উদ্দীপনা বাড়ায়।
তবে তিরস্কার করার মতো কোন ঘটনা ঘটলে অথবা ব্যবসায় ক্ষতি হলে অবশ্যই তার ব্যবস্থা নিতে হবে। ভালো কাজের জন্য যেমন প্রশংসা একজন কর্মীর প্রাপ্য, তেমনি খারাপ কাজের জন্য তিরস্কার কোন না কোনভাবে তাকে করতেই হবে। তিরস্কারের জন্য কৌশল নিতে হবে। দক্ষ এবং কৌশলী ম্যানেজম্যান্টই পারবে প্রয়োজনীয় তিরস্কার করেও কর্মীকে ধরে রাখতে। ব্যবসা বানিজ্য বিষয়টি পৃথিবীতে যতদিন থেকে শুরু হয়েছে ততদিন থেকেই এই কর্মী ব্যবস্থাপনা চলে আসছে। আর এই কর্মী ব্যবস্থাপণার উপরই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাভক্ষতির বিষয়টি নির্ভর করে। তাই কর্মীদের কাজের দক্ষতা যোগ্যতা সব বিষয়েই মালিকের ধারণা থাকতে হবে। মাঝে মাঝে তাদের নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।
এ ক্ষেত্রে বিশ্বের সফল ব্যবসায়ীদের ম্যানেজারিয়াল ইতিহাস থেকে এই ধারণা পাওয়া যায় কিভাবে কর্মী ব্যবস্থাপনা করতে হবে। প্রথমত বসকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময়ে মিটিং করতে হবে। সবার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কর্মীদের নাম ধাম, পারিবারিক অবস্থা, অফিসে তাদের পারফরম্যান্স কেমন হচ্ছে, এসবের অবশ্যই আপডেট তথ্য রাখতে হবে। মাসে একটি বা দুটি সভা রাখতে হবে কর্মীদের কাজ মূল্যায়নে জন্য।
সফল বিশ্বখ্যাত ব্যবসায়ীরা কর্মীকে তিরস্কার করার ক্ষেত্রে কি করেন ? কোন কর্মীকেই এমনভাবে তিরস্কার করেন না, যাতে তিনি পরবর্তীতে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে নিজেকে ছোট মনে করেন। কারণ অফিসের বসের তিরস্কার মনে ভীষন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। দেখা যায় অফিসের প্রধান যদি কোন কর্মীকে তিরস্কার করেন সবার সামনে তবে অন্যরাও তাকে একটু বাঁকা চোখে দ্যাখেন। এভাবে একজন কর্মীর মনোবল এবং দক্ষতা হারিয়ে যেতে পারে।
সেজন্য একজন বুদ্ধিমান বস বা মালিক যখন কোন ভালো কাজ দেখবেন তবে অবশ্যই নাম ধরে প্রশংসা করবেন। এতে অন্যরাও মনে করবে বস তো খুব উদার। ভালো কাজকে উৎসাহিত করুন। স্বীকৃতি দিন। কোন একজনের প্রশংসা করার পাশাপাশি আশপাশে থাকা অন্যদেরকেও উৎসাহিত করার জন্য বলুন, আপনাদের জন্য গতিশীল এবং ভালো কর্মী পেয়েছি বলেই ব্যবসায় সাফল্য আসছে। এই প্রতিষ্ঠানটি আপনাদের জন্যই টিকে রয়েছে। আপনারাই ভবিষ্যতে এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
এখন বলা প্রয়োজন, সব সময়ই যে কর্মীরা ভালো করবেন এমন নয়। কখনো কখনো কোন একজন কর্মীর কারণে আপনার প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হতে পারে। তখন আপনি কি করবেন ? সবার সামনে তাকে তিরস্কার করবেন? বকাঝকা করবেন?
না, অবশ্যই আপনি তা করবেন না। আপনি সভায় খাতওয়ারি তিরস্কার করবেন। বলতে পারেন, এই সেকসনের ভুলের কারণে এখানে ক্ষতির স্বীকার হয়েছি। এটাকে আমাদের রিকভার করতে হবে। আপনারা নিজেরা এ ক্ষতির কারণ বের করে তা রিকভার করুন। আপনি যদি বুঝতেও পারেন যে সুনির্দিষ্ট অমুক ব্যাক্তি কাজটি করেছে, তাও আপনি সবার সামনে নাম ধরে তিরস্কার করবেন না। কোন কাজে প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসাবে আপনি তিরস্কার করলে সেই কাজে খারাপ করার জন্য অভিযুক্ত কর্মীর আফসোস থাকবে না। সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেবার তাড়া থাকবে না।
মিটিং এর পর অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে নিজের রুমে ডেকে কথা বলুন। প্রয়োজনের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে তাকে সহযোগিতা করুন। তিনি যে সম্পূর্ণরূপে দায়ী নন, সেটি তাকে বলে সহজ করুন। এ পন্থা নিয়ে এক সময় দেখবেন ওই কর্মী নিজেই তার দায় স্বীকার করবেন এবং উদ্বুদ্ধ হবেন।
সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে। কিন্তু শিক্ষিত এসব মানুষের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিচ্ছে না তেমন কেউ। বেকারত্ব বাড়ছে গাণিতিক হারে। আর তাই চাকরির বাজারে ঘুরে ঘুরে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে তরুণ সমাজ। বুদ্ধি আছে, শ্রম দেওয়ার ইচ্ছা আছে কিন্তু পথ চেনা নেই। তাই শ্রমশক্তির অপচয় হচ্ছে নানা সামাজিক অপরাধের মধ্য দিয়ে। পরিবারেও বাড়ছে অশান্তি। মুক্তির পথ জানা নেই, কিন্তু মুক্তি চাই। আমরা luckyideabd.com জানাচ্ছি আপনাকে সেই হতাশার জগৎ থেকে মুক্তির পথ। আমাদের ভুবনে আপনাকে স্বাগত।
আরো পড়ুন